সুজন হাওলাদার বিশেষ প্রতিনিধি।
দ্বীপ জেলা ভোলার বাহিরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম লঞ্চ হলেও সার্ভিস নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনা থাকলেও এবার মানবিক দৃষ্টান্ত দেখালেন কর্ণফুলী-১১ লঞ্চের স্টাফরা।
আজ রাত সাড়ে ১০ টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চটি ছেড়ে আসার কিছুক্ষণ পূর্বেই বরফ ছাড়া সাদা কাপড়ে পেছানো একটি মরদেহ উঠানো হয়। লাশের স্বজনরা লাশটি লঞ্চের নিচতলায় রেখে চিন্তায় পড়ে যান। সকাল পর্যন্ত বরফ ছাড়া কি ভাবে রাখবেন? অবশেষে লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ জাফর আহমেদ এগিয়ে এসে কথা বলেন মরহুম ব্যক্তির ছেলের সাথে। পিতৃহারা মনির বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে আমার বাবা ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। লঞ্চ পাবো না তাই কফিন ও বরফ ছাড়াই নিয়ে আসছি। আমাদের বাড়ী চরফ্যাশনের এয়াজপুর।
এখন বরফ ছাড়া কি ভাবে নিবো বুঝে আসে না। পিতাহারা বাবার কথা শুনে কেবিন ইনচার্জ জাফর আহমেদ মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে স্টাফদের সহযোগীতায় দ্বিতীয় তলায় ভিআইপি ডিলাক্স এসি কেবিনে মরদেহটি নিয়ে যান।
এদিকে কর্ণফুলী লঞ্চ স্টাফদের এই উদারতা দেখে আবেগআপ্লুত হয়ে যান মরহুমের স্বজনরা। মরহুমের পুত্রবধূ বলেন, আমরা কখনো ভাবতে পারিনি যে আমার শ্বশুরের মরদেহ কে এত সম্মান দিয়ে ভিআইপি এসি কেবিনে রাখা হবে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে লঞ্চ স্টাফদের কৃতজ্ঞতা জানাই। এই মানবিকতা কে দৃষ্টান্ত বললেন যাত্রীরা।
যাত্রী আহসান কবির বলেন, কর্ণফুলী লঞ্চ আজ একজন সাধারণ মরদেহ কে যে সম্মান দেখালো এ থেকে সকল লঞ্চ মালিক ও স্টাফরা শিক্ষা নেওয়া উচিত।
কর্ণফুলী-১১ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ জাফর আহমেদ বলেন, আমরা দেখলাম বরফ নাই আবার কফিন ও নাই তাই আমাদের ভিআইপি ডিলাক্স এসি কেবিনে রেখেছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের কর্ণফুলী লঞ্চ সময়ের কুকিল নয়। আমরা সব সময়ই একই নিয়মে যাত্রীদের সব্বোর্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে দিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ।