শিরোনাম
ভোলায় বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালিত  ভোলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ২ ড্রেজার মেশিনের মালিক কে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা নিষিদ্ধ পলিথিন রাখার অপরাধে ১ ব্যবসায়ীকে জরিমানা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরছেন জেলেরা ভোলায় জামায়াতের নতুন জেলা আমির মাস্টার জাকির হোসাইনের শপথ ভোলায় ইউপি সচিবদের বদলি আতঙ্ক, একযোগে ৪১ সচিব কে বদলির আদেশ  বোরহানউদ্দিনে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগে যুবদল নেতা বহিষ্কার ও চৌকিদারকে শোকজ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ভোলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ভোলায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে লাভলু হাওলাদারের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‌্যালি 

কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরছেন জেলেরা

NEWS ROOM / ৪ বার ভিউ
আপডেট : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আশিকুর রহমান শান্ত ভোলা প্রতিনিধি ঃ

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে অনেক আশা ভরসা নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশা নিয়ে তীরে ফিরছে ভোলার প্রায় ২ লক্ষাধিক জেলে। অভিযানের ২২ দিন ধারদেনা করে সংসার চালালেও আশা ছিল নিষেধাজ্ঞা শেষে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ পাবে এবং সেই টাকা দিয়ে ধার দেনা শোধ করবে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষে কাঙ্খিত সেই ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা তাই এখন চরম দুঃশ্চিন্তায় ও হতাশায় পড়েছেন তারা। অনেক আশা নিয়ে বাজার সদাই ও ইঞ্জিনের তেল সহ কয়েক হাজার টাকার বাজার করে ইলিশ শিকারি নেমেছেন ছেলেরা। অথচ এখন সেই বাজারের খরচও না ওঠায় নদী বিমুখ হয়ে পড়ছেন অনেক জেলে। আড়ৎতে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় মোকামের দাদন নিয়ে চিন্তিত আড়ৎদাররাও।

সরেজমিনে ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ও কয়েকটি মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকারে নেমেছেন। আবার কেউ কেউ ইলিশ বিক্রির জন্য ঘাটের আড়ৎ গুলোতে নিয়ে আসছেন। আড়তে ইলিশ বিক্রির পর খরচের হিসেব মেলাতে গিয়েই তাদের মাথায় হাত। কারো ট্রলারের তেলের খরচই ওঠেনি, আবার কেউ ভাগে পেয়েছেন মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

৮ জন মাঝি মাল্লা সহ মেঘনায় ইলিশ শিকারে গিয়েছেন মুনছুর মাঝি। তিনি বলেন, অভিযান শেষে আমরা ধারদেনা হইয়া আসছি নদীতে মাছ ধরতে। নদীতে এখন মাছ কম। নিজেরাই চলাফেরা করতে কষ্ট। আগামী দিনে কিভাবে চলব আল্লাহই ভালো জানে।

ভোলার খাল মাছ ঘাট এলাকার ইসমাইল মাঝি বলেন, রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩ খেও জাল বাইছি। মাছ পাইনি বললেই চলে। মনে করছি বড় বড় ইলিশ মাছ পাব। বিগত দিনের দেনা তো আছেই। আশা করছিলাম ইলিশ মাছ ধইরা দেনা পরিশোধ করব। মোট ৭ টা ইলিশ পাইছি, মাত্র ১১৫০ টাকা বিক্রি হইছে।

বিল্লাল মাঝি বলেন, রাতে গাঙ্গে গিয়ে দুপুর বেলায় আসছি। ঘাটে মাছ বিক্রি করে ১২০ টাকা করে সবাই ভাগে পাইছি। এখন নদীতে গেলে আমাদের সংসারই চলে না।

তুলাতুলি মেঘনা এলাকার মনির মাঝি বলেন, নদীতে গিয়ে ১৪৭০ টাকার মাছ পাইছি। এতে আমাদের তেলের টাকাই ওঠেনি। নদীতে বড় ইলিশ এক্কেবারেই নেই, একটাও পাইনি, খুব লসে আছি।

ভোলার খাল মাছঘাটের আড়ৎদার সেলিম ব্যাপারী, ইলিশা চডার মাথা মাছঘাটের আড়ৎদার মোঃ কামাল ব্যাপারী ও তুলাতুলি মাছঘাটের আড়ৎদার নোয়াব ব্যাপারী এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলেরা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ তারাও। তারা বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আমরা আড়ৎ খুলছি, জেলেরাও নদীতে গেছে। গত বছরের তুললায় এ বছর অভিযানের পর ইলিশ তিন ভাগের একভাগ ও নেই। ইলিশের সরবরাহ কমের কারণে আমাদের ব্যবসার পরিস্থিতি অনেক খারাপ। ইলিশ থাকলে ব্যবসা চাঙা থাকতো। বিভিন্ন মোকাম থেকে দাদন এনেছি, এখন আমরা হতাশাগ্রস্ত।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব এর কাছে কাঙ্খিত ইলিশ মাছ না পাওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন মরা গোন (কৃষ্ণপক্ষ)। সামনে পূর্ণিমা আসছে। পূর্ণিমা শুরু হলে ইলিশ ফের নদীতে আসবে। ইতোমধ্যে যে ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়তে এসেছে সেগুলো সাগরে ফিরে গেছে। যার কারণে জেলেদের জালে কম ইলিশ ধরা পরছে। তবে সামনের গোন থেকে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে বলেও আশাবাদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, মজুদ ও বিপণন এর উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞা শেষে ৩ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশ শিকারে নামেন এ সব অঞ্চলের জেলেরা।  জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোলায় ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। ভোলা জেলায় বিগত ৫ বছরের মধ্যে ইলিশের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা এটি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ

ক্যাটাগরি