সিনিয়ার স্টাফ রিপোর্টার ভোলা।।
ভোলার লালমোহন( ৪)চরফ্যাশন উপজেলার (১৭) সর্বমোট ২১ জেলে বর্তমানে ভারতের কারাগারে বলে জানা গেছে। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জন কারী বর্তমান সময়ে তারা ভারতের কারাগারে থাকায় চরম বিপাকে পরিবারগুলো দেখার যেন কেউ নেই।পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন না থাকায় তাদের স্ত্রীরা এখন বাবার বাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘ তিন মাস ধরে ভারতের কারাগারে বন্ধি রয়েছেন তারা। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ হওয়া এসব জেলেদের সন্ধান মিলেছে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটি কারাগারে। তাদের ফিরে পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনরা। তিন মাস ধরে তাদের ফিরে না পাওয়ায় অভাব-অনটনে রয়েছে পরিবার।
লালমোহন পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙ্গাসিয়া গ্রামের ইব্রাহিম, ছালাউদ্দিন, বাবুল ও আবুল কালাম। গত ২০ অক্টোবর চরফ্যাশনের নুরাবাদ গ্রামের সৈয়দ মাঝির ট্রলারে করে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যান। সাগরে থাকা অবস্থায় ৪দিনের মাথায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানার রাতে তাদের ট্রলারটি সমূদ্রে ডুবে যায়। পরে ভাসতে ভাসতে দিক হারিয়ে ভারতে চলে যায় জেলেরা। ভারতের নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে তাদের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে পাঠায়। ৩ মাস তাদের কোন খোঁজ পায়নি স্বজনরা। স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ভাই-বোন সকলে নিখোঁজ জেলেদের ফেরার প্রহর গুনছিলো। কারো অপেক্ষা স্বামীর জন্য, কারো অপেক্ষা সন্তানের জন্য। আবার কারো বা অপেক্ষা বাবার জন্য। এরা বেঁচে ছিলেন কী না তাও স্বজনরা জানতেন না। কিছুদিন আগে লালমোহন থানার মাধ্যমে খবর পান নিখোঁজ জেলেরা ভারতের কারাগারে বন্ধি রয়েছে। তাদের বিষয়ে তথ্য পাঠানো হবে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ট্রলার ডুবির পর তাদের সন্ধান মিলেছে ভারতে। তারা জীবিত থাকলেও অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে বন্দি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কারাগারে। ওই কারাগারে লালমোহনের ৪ জন ছাড়াও চরফ্যাশন উপজেলার আরো ১৭ জেলে বন্দি রয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও ৩ মাসেও দেশে আনা সম্ভব হয়নি। এতে নিখোঁজদের পরিবারে শঙ্কা কাটছে না। এদের মধ্যে ইব্রাহিম ও বাবুলের স্ত্রী সংসার চালাতে না পেরে সন্তানদের নিয়ে চলে গেছেন বাবার বাড়িতে। প্রিয়জনকে ফিরে পেতে অভাব-অনটনে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা। ইব্রাহিমের স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, ৬ বছরের এক ছেলে ও ১১ বছরের ১ মেয়েকে নিয়ে তার সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল। পরিবারে আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন স্বামী ইব্রাহিম। সংসার চালাতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরে যান মাছ ধরতে। তিনি এখন কারাগারে বন্ধি থাকায় সংসার চলছে না। তাই বাধ্য হয়ে দুই সন্তানসহ বাবার বাড়ি চলে গেছেন। বাবুলের স্ত্রী বিবি ফাতেমাও সন্তানসহ বাবার বাড়ি চলে গেছেন। তার সংসারেও আয়ের আর কোন পথ নেই। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে দুর্যোগ উপেক্ষা করেই মাছ ধরতে সাগরে গিয়ে এখন ভারতের কারাগারে বন্ধি হয়েছেন এসব জেলে। দ্রæত সময়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবী তুলেছেন স্বজনরা।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, লালমোহনের ৪ জেলে পশ্চিম বঙ্গের একটি কারাগারে বন্ধি আছে। তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। আমরা সব ধরণের তথ্য দিয়েছি। তাদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।