স্টাফ রিপোর্টার।।
পিসিওএসের আক্রান্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোরীর সংখ্যাই বেশি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) সচেতনতা মাস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় (১ সেপ্টেম্বর ২০২২খ্রিষ্টাব্দ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ শোভাযাত্রা ও এ ব্লক অডিটোরিয়ামে বৈজ্ঞানিক সেমিনারটি দুপুর সাড়ে ১২ টায় বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটি আয়োজন করে। এ বারের প্রতিপাদ্য বিষয় পিসিওএস একটি হরমোন জনিত সমস্যা। জানুন , চিকিৎসা নিন।’
সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বে প্রতি ১০ নারীর মধ্যে একজন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস রোগে আক্রান্ত। প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীরা সাধারণত এ রোগে ভুগছেন। আক্রান্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোরীর সংখ্যাই বেশি। দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ এ রোগ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, বন্ধ্যত্ব, জরায়ু ক্যান্সারসহ দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে পিসিওএস। এ পরিস্থিতিতে পিসিওএস নির্মূলে ওজন নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন বলে আজ চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। ৩৯৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরী করেছেন। এখন বাংলাদেশে ৩১টি ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের মাঝে বিতরণ করছে বর্তমান সরকার। তার মধ্যে ডায়াবেটিসের ইনসুলিনও গ্রামের মানুষের মাঝে আওয়ামী সরকার বিতরণ করছে।
তিনি বলেন, পিসিওএস নারীর বহুমুখী রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে দৈহিক ওজন কমানোসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি। অনেকে অনেক ধরণের রোগে ভুগেন । সেটি কী রোগ সেটি জানেন না। কিছু উপসর্গ দেখে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে কোনটি পলিসিস্টিক, কোনটি হরমোন জনিত রোগ সেটি জানা যাবে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া যাবে। পলিসিস্টিক একটি হরমোন জনিত রোগ। এ রোগের ফলে নারীদের পিরিয়ডের অনিয়মতা, ইনফারলিটি ও বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে। এটি বহুমাত্রিক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। এ রোগটির হরমোন জনিত হলেও জীবনাচার পরিবর্তন করে সুস্থ থাকা যায়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গবেষণায় ভাল করার অনুপ্রেরণা দেবার জন্য আমরা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা পিএইচডি গবেষণার জন্য ২৬টি থিসিস পেয়েছি। আমাদের প্যানেল অব এক্সাপার্টরা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। আশা করছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মান আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে ।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, উপ উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম ও বাংলাদেশ পিসিওএস টাস্কফোর্সের মহাসচিব সহকারী অধ্যাপক ডা. এবিএম কামরুল হাসান ।
সেমিনারে প্যানেল অব এক্সাপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ আবুল হাসানাত, অধ্যাপক ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. মো.ফরিদ উদ্দিন, মা ও প্রসূতি বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল, রেডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোছা. সাঈদা শওকত , ইউনাইটেট হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. হাফিজুর রহমান।
সম্পাদনা: সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব ও সুব্রত বিশ্বাস। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার ও সুব্রত মন্ডল। ছবি: মোঃ মোঃ আরিফ খান।