হাসনাইন আহমেদ ।।
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি পেশায় দিন মজুর। গত ২০২০ সালে শখের বসে নিজের জমানো টাকার সাথে অন্যের কাছ থেকে সুদে আরো ছয় হাজার টাকা নিয়ে রিয়েলমি সি-এ মডেলের একটি স্মার্ট ফোন কিনেন। কিন্তু কেনার কয়েকদিন পরেই মোবাইলটি হারিয়ে যায়। পরে তিনি ভোলা সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এ ডায়েরীর আলোকে ভোলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে মোবাইলটি উদ্ধার করেন। মোবাইল উদ্ধারের খবরে বেশ আনন্দিত মোবাইলের মালিক মো. ইউনুছ।
তিনি জানান, হারানোর পর তিনি ভেবেই নিয়েছেন মোবাইলটি আর পাবেন না। তারপরও মানুষের কথায় তিনি মোবাইলের আইএমই নাম্বার দিয়ে ভোলায় থানায় জিডি করেছেন। জিডির দুই বছর পার হলেও মোবাইলের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় তিনি মোবাইলের আশা একেবারে ছেড়েই দিয়েছেন। কিন্তু গত মাসের শেষের দিকে থানা থেকে তার কাছে ফোন আসে যে, তাঁর হারানো ফোনটি পাওয়া গেছে। এ খবরে তিনি অনেক খুশি হয়েছেন। সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের হাত থেকে মোবাইলটি বুঝে নিয়েছেন ইউনুছ। একই সময়ে তাঁর মতো আরো ৮জন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল বুঝে নিয়েছেন পুলিশ সুপারের কাছ থেকে। এরা হলেন- সদর উপজেলার ইলিশা তুলাতুলি এলাকার মো. রকিব, পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মো, নিরব, একই ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের মো. হারুন, উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের অলিউল ইসলাম রনি, ইলিশা ইউনিয়নের মো. রকিব, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মো. সিরাজুল ইসলাম, ভোলার পুলিশ সদস্য মো. এনায়েত হোসেন, ও মো. শাহাদাত হোসেন।
ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২১ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন যায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ৯টি মোবাইল উদ্ধার করে জেলা গোয়ন্দা শাখার পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যে ৭টি স্মার্ট ফোন বাকী দুইটি ফিচার ফোন। তবে পর্যায়েক্রমে এর সাথে জড়িতদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। এদিকে এতো অল্প দিনের ব্যবধানে ১টি মোবাইল উদ্ধার করায় উদ্ধারকারী দলের পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, মোবাইল কেনার ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। দোকান ও ক্রয় রশিদ ছাড়া কোনো মোবাইল বেচা-কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। মোবাইল হারিয়ে গেলে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধারসহ সাইবার ক্রাইম, সাইবার বুলিং ও তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি আলাদা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল গঠন করা হয়েছে। এ সেল থেকে সকলকে সেবা নেয়ার জন্য আহবান জানান পুলিশ সুপার।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান, জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মো. এনায়েত হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।