স্টাফ রিপোর্টার।।
ভোলার বোরহান উদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নে
স্থানীয় সাংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রাতের আধারে আফরোজা আক্তার নামের এক মহিলার ক্রয়কৃত জমি বালি ভরাট ও টং তুলে রাতারাতি দখল করছে বলে কাচিয়া ইউপির চেয়ারম্যান রব কাজি ও তার জামাতা মোঃ লিটন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝর চলছে। ঘটনাটি ভোলার বোরহানউদ্দিনের কুঞ্জের হাট সংলগ্ন এলাকার কাচিয়া ইউনিয়নে এঘটনা ঘটে।
অভিযোগে আফরোজা বেগম জানায়, তিনি
এডভোকেট চিন্ময় দে নামক এক ব্যক্তি ও তার ভাই থেকে কয়ের মাস পূর্বে কিছু জমি ক্রয় করে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। কাজের প্রথেম স্থানীয় চেয়ারম্যান আঃ রব কাজির নাতি শাওন দালাল এসে রাস্তার অংশের জমি পাবে দাবি করে সন্ত্রাসী জাতীয় লোকজন নিয়ে আফরোজা আক্তারকে নির্মান কাজে বাধা দেয়। রাস্তার পাশের জমিতো সরকারের, যিনি রাস্তা সংলগ্ন জমি ক্রয় করবেন তিনি (মখসামুখসি) এ সরকারি জমিটি ব্যাবহার করে থাকেন। সরকারি জমি ও আরেক জনের জমির সামনের অংশ জমি তারা পাবে কি ভাবে এমন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কোন যুক্তি দেখাতে না পেরে শাওন দালাল তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। শাওন দালাল চলে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান আঃ রব কাজি লোক পাঠিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করার জন্য লোক পাঠান। মৌখিক ভাবে কাজ বন্ধ করার নির্দিষ্ট কোন কারন চেয়ারম্যানের লোকজন
দেখাতে পারেনি বলে নির্মান কাজ চালিয়ে গেছেন আফরোজা আক্তার। চাঁদা না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান ও তার নাতি শাওন। এই ঘটনার কয়েক মাস পরে আফরোজ আক্তার তার বাড়ির অপর পার্শ্বে চিন্ময় দে ও তার ভাই থেকে ৩২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন যাহা চকডোষ মৌজার, এসএ খতিয়ান নং -৮৩১, বিএস খতিয়ান নং-১২২৪, এসএ দাগ নং-২০৬১, বিএস দাগ নং-৩১৮৫। উল্লেখিত জমিটি ক্রয় করার পর আফরোজা আক্তার তার মায়ের অসুস্থতায় তিনি খুলনায় যান। খুলনা থেকে লোক মারফতে আফরোজা আক্তার জানতে পারেন যে তার অনুপস্থিতির সুযোগে কোন কারন ছাড়াই চেয়ারম্যান লোকজন দিয়ে রাতের আঁধারে ফারহানা আক্তারের জমিটি বালি ভরাট করে দখল করিবেন। আফরোজা আক্তার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি তার জমিনের পূর্ব মালিক এডভোকেট চিন্ময় দে'কে জানিয়েছেন।
চিন্ময় দে সার্কেল এসপি ও ওসিকে বিষয়টি জানিয়ে কোন ফায়দা না পেয়ে তিনি ৯৯৯ এ ফোন দিয়েছেন কিন্তু তাতেও কোন ফায়দা পাননি। বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বালু ভরাটের কাজ বন্ধ করতে পারেনাই।
এর পরে ২য় বারের মতো ৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ঐ জমিতে আবারো ঘর তুলে জমি দখল করবেন বলে জানতে পেরেছেন। তিনি জানতে পেরে পূনরায় চিন্ময় দে এর মাধ্যমে বোরহান উদ্দিন থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। তাতেও কোন ফায়দা পাননি। অবশেষে ঐ রাতে অন্য স্থানে ঘর ফিটিংস করে রাতের আধারে তারাহুরো করে আফরোজা আক্তারের সেই জমিতে টং ঘর তুলে জমি দখল করেন।
জমি বিক্রেতা চিন্ময় দে জানান, তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক ও দখল পজিশন থেকে আফরোজা আক্তারের কাছে ২য় ধাপে ৩২ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। কিন্তু তিনি মহিলা হওয়ায় চেয়ারম্যান এর লোকজন তার জমিতে রাতের আঁধারে বালি ফেলে ও ঘর তুলে তাকে বেদখল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বালি ও ঘর তোলার পূর্ব মূহুর্তে তিনি বোরহানউদ্দিনের ওসিকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন তাছাড়াও এক টেলিভিশনের সাংবাদিকের মাধ্যমে পুলিশ সুপার সাহেবকে জানিয়েছেন কিন্তু কোন মতেই জমি দখল ঠেকানো সম্ভব হয়নাই।
চেয়ারম্যানের জামাই
অভিযুক্ত মনজুরুল ইসলাম লিটন এর কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জমিটি তিনি কিনেছেন বলে দাবি করেন, রাতের আঁধারে পুলিশসহ কাউকে তোয়াক্কা না করে কেনো বালি ভরাট ও অন্যস্থানে ঘর ফিটিংস করে মুহূর্তের মধ্যে ঘর তোলা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে কোন সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে না পারলেও মনজুরুল ইসলাম লিটন বলেন ঘরের কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেছে। তবে জমিটি তার পেস্টিজ বলে তিনি স্থানীয় সাংসদ আলী আজম মুকুল সাহেবকে জানিয়ে জমি দখলের কাজ করছেন বলেও মনজুরুল ইসলাম লিটন জানিয়েছেন।চেয়ারম্যানের নাতি অভিযুক্ত মোঃ শাওন দালাল জানায়, তারা ভদ্রলোক বলে জমিটি দখল করতে কিছুটা দেরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আঃ বর কাজি এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বোরহানউদ্দিন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন।
এদিকে এঘটনায় ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী, তারা ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।